নিরেন দাস, জয়পুুরহাট প্রতিনিধি: কাজ না করেই একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আড়াই কোটি টাকা পরিশোধ করেছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক)। যে প্রতিষ্ঠানের নামে কাজটি দেখানো হয়েছে, তারাও জানেন না সে খবর। আগের মেয়রের সময়ে নেয়া প্রকল্পটির অর্থ অন্য প্রকল্পে ব্যয় করা হচ্ছে বলে দাবি প্রকৌশল উপদেষ্টা আশরাফুল হকের।

ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান রাজশাহী সাংস্কৃতিক সংঘ। দীর্ঘ দিন ধরে জরাজীর্ণ ভবনটিতে চলছে সাংস্কৃতিক চর্চা। অথচ এই ভবনটি সংস্কার ও অডিটোরিয়াম নির্মাণ ব্যয় দেখিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় তিন কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।

রাজশাহী সাংস্কৃতিক সংঘের অডিটোরিয়াম নির্মাণে ২০১৭ সালে দরপত্র প্রক্রিয়া শুরু করে ২০২০সালে ২৬শে জানুয়ারি কাজ শেষ হবার প্রতিবেদন দেয় রাসিক প্রকৌশল শাখা। ১৯শে আগষ্ট বিল পরিশোধ করা হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। যদিও এমন কোন কাজের খবরই জানেন না সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।

রাজশাহী সাংস্কৃতিক সংঘের সভাপতি আনিসুর রহমান বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে একলক্ষ টাকা অনুদান দেয়া হয়েছিল। সেটা দিয়ে মেঝে সংস্কার ও প্রবেশ দ্বারের রাস্তা সংস্থার করা হয়েছে।

সাধারণ সম্পাদক মোখলেসুর রহমান মুকুল বলেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনকে লিখিত ভাবে জানিয়েছিলাম কিন্তু এখন পর্যন্ত সংস্কারে কোন পদক্ষেপই তারা নেয়নি।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, কাজ না করে বিল পরিশোধের ঘটনা দুঃখজনক। এমন ঘটনার তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। সুশাসনের জন্য নাগরিক সভাপতি আহমদ শফি উদ্দিন বলেন, কাজ না করে সম্পূর্ণ বিল তুলে নেয়া হয় এবং এমন ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয় তা ক্ষমাহীন অপরাধ।

সুশাসন বিশ্লেষক সুব্রত পাল বলেন, অনৈতিক কাজের পিছনে যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছেন তাদেরকে কিন্তু আইনের আওতায় নিয়ে আসা উচিত। পুরো প্রক্রিয়ার সময় সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন আশরাফুল হক। তাঁর দাবি জায়গাটি নিয়ে জটিলতা থাকার কারণে টাকা ব্যয় করা হয়েছে অন্য প্রকল্পে। তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক সংঘের ল্যান্ড নিয়ে জটিলতা দেখা দিলো। কেউ কেউ ক্লিন করার পরামর্শ দিলেও কাগজ পত্র পরিক্ষা নীরিক্ষা করে দেখা গেল এখানে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে না। ওই ফান্ড পাবলিক লাইব্রেরী প্রকল্পে ট্রান্সফার করেছি। তবে আশরাফুল হক যে প্রকল্পে ভারতের দেয়া অর্থ ব্যয় করার কথা জানিয়েছেন সেই প্রকল্পের কাজও শেষ হয়নি।